খালেদার বিদেশে যাওয়া নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য সঠিক নয়: কায়সার কামাল
বাংলার জমিন ডেস্ক :
আপলোড সময় :
২৫-০৯-২০২৩ ০৪:৩২:৪৯ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২৫-০৯-২০২৩ ০৪:৩২:৪৯ অপরাহ্ন
খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি
খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাকে 'সঠিক নয়' বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবী কায়সার কামাল। সোমবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
কায়সার কামালের অভিযোগ, বিএনপি প্রধানকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে ২০ দিন আগে পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন করা হলেও, সরকার এখন তা অস্বীকার করছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবী বলেন, 'এখন ওনারা যে কথাগুলো বলছেন যে, চিঠি পান নাই বা আদালতে যেতে হবে, সব কিছুই হচ্ছে ছল-চাতুরী। ছল-চাতুরী জাতির সাথে। রাষ্ট্রপক্ষ যেটা বলছেন, সেটা এখতিয়ার বহির্ভূত। কেননা খালেদা জিয়া মুক্ত আছেন এক্সিকিউটিভ অর্ডারে। আদালতের নির্দেশে না।'
এ সময় কায়সার কামাল জানান, গত ৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার জন্য আবেদন করেন তাঁর ভাই শামীম ইস্কান্দার। তবে, সরকার এখন তা অস্বীকার করে অনুমতি দিতে কালক্ষেপণ করছে। সংবিধান ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়া খালেদা জিয়ার অধিকার বলেও দাবি করেন তিনি।
খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে অনেক দিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছেন বিএনপির নেতারা। গত রোববার বিএনপির এক সমাবেশে খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠাতে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে কোনো আবেদন আসেনি: আইনমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে কোনো আবেদন আসেনি: আইনমন্ত্রী
তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানো কোনো আবেদন তারা পাননি। তিনি দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হওয়ায় এ সুযোগ নেই। তবে প্রয়োজনে বিদেশ থেকে চিকিৎসক এনে তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যাবে।
গত শনিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, 'বিদেশে চিকিৎসার জন্য আবেদন করলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে মতামত চাইতে পারে। পরে বিষয়টি দেখা যাবে। এখন কিছু বলা যাবে না।'
এর পরদিন রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন সাংবাদিকদের বলেন, 'ওনাকে (খালেদা) বিদেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে হয়তো আইনগত জটিলতা আছে। আদালতের নির্দেশনার বাইরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কিছু করার সুযোগ নেই।'
দুর্নীতির দুই মামলায় আদালতের রায়ে দণ্ড পেয়েছেন খালেদা জিয়া। দুই বছর জেলেও থেকেছেন। কিন্তু ২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারি শুরু হলে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত করে তাঁকে শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়। এর পর কয়েক দফায় বেড়েছে সাজা স্থগিতের মেয়াদ।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ঢাকার একটি বিশেষ আদালত ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার পর ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান খালেদা জিয়া। পরের বছর ৩০ অক্টোবর হাইকোর্ট এই মামলায় তাঁর আপিল খারিজের পর শাস্তি বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর ঢাকার আরেকটি বিশেষ আদালত সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে দোষী সাব্যস্ত করেন। আদালত তাঁকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন।
খালেদা জিয়া বেশ কিছুদিন ধরেই ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এরমধ্যে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত শুক্রবার তাঁকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। এর আগেও চিকিৎসকের পরামর্শে তাঁকে সিসিইউতে নেওয়া হয়েছিল।
৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়া হার্টের সমস্যা, লিভারসিরোসিস ছাড়াও নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। এ ছাড়া আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, দাঁত ও চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতা রয়েছে তাঁর। এরই মধ্যে কয়েক দফা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেন তিনি। গত বছরের জুনে খালেদা জিয়ার এনজিওগ্রাম করা হলে তাঁর হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। এর একটিতে রিং পরানো হয়।
সর্বশেষ গত ৯ আগস্ট শারীরিক অসুস্থতার কারণে আবারও রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। এর পর থেকে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।inde/tv
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Jamin
কমেন্ট বক্স